বেবি চক্রবর্ত্তী:কলকাতা:- কলকাতায় শুরু হল এনিমি প্রপার্টি বা শত্রু সম্পত্তির সমীক্ষা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট এই সমীক্ষার শুরু করল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই ব্যাটালিয়ন জওয়ান এনে এই সমীক্ষা শুরু করেছে এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট। রাজাবাজারে প্রায় ৪৪ কাঠা জমির উপরে দীর্ঘদিন ধরেই বসবাস করছেন প্রায় ৭০০০ বাসিন্দা, রয়েছে ২৫টি দোকান। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এখানকার অনেক নাগরিকই এই সম্পত্তি ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যান। তারা কেউ এই সম্পত্তি দাবি না করায়, তা এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অধীনস্থ হয়ে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই সমীক্ষার কাজ শুরু করতে এসেছিলেন এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকরা। তখন তাদের উপরে এলাকার মানুষজন চড়াও হয়েছিলেন, ফলে কাজ বাকি রেখেই চলে যেতে হয়েছিল তাদের। এরপর এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে সমীক্ষা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে মূলত বলা হয়েছে যে এই এনিমি প্রপার্টিতে কতগুলি বেআইনি নির্মাণ তৈরি করা হয়েছে, তার তালিকা তৈরি করতে হবে। সেগুলি আদৌ ভাঙা হয়েছে কি না, তার তালিকাও তৈরি করা হবে। এছাড়া কতজন এই এনিমি প্রপার্টিতে বসবাস করছেন, এবং কতজন কর দিচ্ছেন, সেই তালিকাও তৈরি করা হবে। সমস্ত তালিকা সহ সমীক্ষার রিপোর্ট, স্ট্যাটাস রিপোর্ট হিসেবে তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে এবং দিল্লিতে থাকা এনিমি প্রপার্টি ডিসপোজাল কমিটিতে পাঠানো হবে। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডেপুটি সেক্রেটারি ও কলকাতা এনিমি প্রপার্টি ইনচার্জ বলেন, “এনিমি প্রপার্টি হল যারা পাকিস্তান বা চিন যুদ্ধের সময় অন্য দেশে চলে গিয়েছেন, তাদের রেন্টও অন্য দেশে চলে যাচ্ছিল। এটা আটকাতেই সরকারের এই পদক্ষপ। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি বলেন, “যদি সম্পত্তির মূল্য বা ভ্যালু ১ কোটি টাকার নীচে হয়, তবে যারা এই সম্পত্তিতে থাকেন তারা ইপি়ডিসির মাধ্যমে সম্পত্তি কিনে নিতে পারেন। এর বেশি হলে, তা অনলাইন বিডিং হবে। এই প্রেফারেন্স পেতে হলে, আগে রেন্টাল সিস্টেমের অধীনে আসতে হবে।”কেন্দ্রের তরফে এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই ধরনের সম্পত্তিতে যারা বসবাস করছেন, তাদের তিনটি শর্ত দিতে। প্রথমত, এই সম্পত্তিতে যারা বসবাস করছেন, তারা সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অধীনে চলে আসবে এবং সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে এই সম্পত্তি কর দেবেন। তাদের আর কলকাতা পুরসভাকে সম্পত্তি কর দিতে হবে না।
দ্বিতীয়ত, এই সম্পত্তিতে যেহেতু তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন, তারা এই সম্পত্তি কিনে নিতে পারেন।
তৃতীয়ত, এই সম্পত্তি সম্পূর্ণ খালি করে দিতে হবে অথবা এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট তাদেরকে উচ্ছেদ করে দেবে।পশ্চিমবঙ্গে ৪ হাজার ৩০১টি এই ধরনের সম্পত্তি রয়েছে যেগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অধীনস্থ।