আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন (বাসক) এর চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক, বাসক এর পরিদর্শনটীমের র্প্রতিবেদনের আলোকে ঢেউয়া হাজী পাড়া জামে মসজিদের দানবাক্সের টাকা পয়সা চুরির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ মসজিদের বিভিন্ন স্থাপনা ভাংচুরকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি অব পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে একখানা আবেদন করেন, যার সারমর্ম নিম্নরুপঃ
জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, গত ০১/১০/২০২৪ ইং তারিখের পূর্বে চট্টগ্রামের রাউজান থানাধীন “ঢেউয়া হাজী পাড়া জামে মসজিদ” এর দানবক্সের টাকা চুরিসহ মসজিদের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করায়, উক্ত মসজিদ কমিটির যুগ্ম অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লী শাহজাহান ইকবাল এক প্রকার বাধ্য হইয়া গত ০১/১০/২৪ইং তারিখে দৈনিক পূর্বদেশ ও দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় একখানা “সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি” প্রকাশ/প্রচার করেন। উক্ত বিজ্ঞপ্তি আমি নিম্নস্বাক্ষরকারীর চোঁখে পড়ার পর, আমি চট্টগ্রামের মাননীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, মাননীয় ডি আই জি অব পুলিশ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও রাউজান থানার ও’সি সাহের বরাবর “অবগতিপত্র” প্রদান করিয়া অত্র সংস্থ্যার একটি চৌকস পরিদর্শনটীম রাউজান উপজেলার হাজী পাড়ায় প্রেরন করি। পরিদর্শনটীম পরিদর্শন শেষে আমাকে নিম্নোক্ত তথ্যাদি প্রদান করেন।
(১) উক্ত ঢেউয়া হাজী পাড়া জামে মসজিদে এয়ার কন্ডিশন ফ্লোর স্ট্যান্ড, এসি আছে ৪টি, যার আনুঃ মুল্য-১১,০০,০০০/- টাকা,২) উইন্ডোজে এসি ৪টি, যার আনুঃ মূল্য -৭,০০,০০০/- টাকা, ৩) বৈদ্যুতিক পাখা-৭০টি, যার আনুঃ মূল্য-২,৮০,০০০/- টাকা,৩) আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম (মাইক), যার আনুঃ মুল্য ৭০,০০০/= টাকা,৪) ২ ও ৪ ঘোড়ার ২ টি বৈদ্যুতিক পানির মোটর, যার আনুঃ মূল্য ৭৫x২= ১,৫০,০০০/- টাকা, ৫) মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য স্থাপিত ঝর্না, যার আনুঃ মূল্য-৩,৫০,০০০/= টাকা।৬) মসজিদের অফিসে ব্যবহারের জন্য আলমারী ও চেয়ারসমুহ, যার আনুঃ মূল্য-৪০,০০০/- টাকা,৭) মসজিদের আবাসিক বাণিজ্যিক ভবন, যাহার বাৎসরিক ভাড়া আদায় হয়, আনুঃ ১,৪৪,০০০/= টাকাসহ মসজিদ পরিচালনার জন্য জন-সাধারনের বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বিভিন্ন অংকের টাকা ও বিভিন্ন উপটৌকন এবং মসজিদের নামে প্রায় ২ কোটির উপরের সম্পদ আছে।(৮) উপরোক্ত সম্পদ ব্যতিত নামে-বেনামে আরো অনেক সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যায়।
উপরোক্ত মসজিদের, উপরোল্লিখিত সম্পদসমূহ আত্মসাতের অভিপ্রায়ে উক্ত মসজিদের আশে-পাশের কিছু কুচক্রিমহল, উক্ত মসজিদের দায়িত্বরত ০২জন যুগ্ম অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লীর গুটিকয়েক ব্যক্তিগত শত্রুরা পরস্পর যোগসাজশে একই উদ্দেশ্যে স্থানীয় কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী/চোর/অস্ত্র ধারীদের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতঃ মসজিদের দানবক্স ভাংচুর করিয়া, টাকা পয়স লুট করাসহ মসজিদের বিভিন্ন স্থানে স্থিত মূল্যবান স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে এবং ভবিষ্যতেও করার সম্ভাবনা রহিয়াছে।
পরিদর্শনটীমকে স্থানীয় বেশ কয়েকজন সাধারণ মুসল্লী তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায় যে, তাদের এলাকায় শহীদুল্লাহ বদরু ও মোঃ মনছুর নামক জনৈক ব্যক্তি বিভিন্ন সন্ত্রাসীদেরকে সাথে নিয়ে মসজিদের উপরোক্ত সম্পদ ও টাকা পয়সা লুটতরাজ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যাহা অত্যান্ত ঘৃনিত কাজ। উপরোক্ত বদরু ও মনছুরকে আইনানুগ ভাবে প্রতিহত করা না গেলে, মসজিদের অপূরণীয় ক্ষতিসহ সমাজিক শান্তি শৃংখলা বিনষ্টের সম্ভাবনা রহিয়াছে।
উপরোক্ত লোকদের বেআইনী কার্যাদি বর্তমান মসজিদ কমিটির লোকজন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলে, তারা আগামী শুক্রবারের মধ্যে নতুন কমিটি ঘোষণা করার হুমকী দেয়। উক্ত কারনে সমাজের মানুষের মধ্যে শান্তি শৃংখলা বিনষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রহিয়াছে বিধায় উপরোক্ত ব্যক্তিগনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শান্তিপ্রিয় মুসল্লীগণ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, মসজিদের মোতাওয়াল্লীদ্বয় ওয়াকফ প্রশাসন, বাংলাদেশ কর্তৃক মনোনিত। বর্তমান মসজিদ কমিটি, মসজিদের সাধারণ মুসল্লী এবং দায়িত্বরত অফিসিয়াল যুগ্ম মোতাওয়াল্লীদ্বয় কর্তৃক স্বীকৃত। যুগ্ম অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লীর ব্যক্তিগত শত্রুসহ তাদের দলীয় সন্ত্রাসীরা সংগঠিত হয়ে, বেআইনী ভাবে বর্তমান মসজিদ কমিটি বিলুপ্ত করে, তাদের মনোনীত লোকজনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের প্রচেষ্টাসহ ঢেউয়া হাজী পাড়া জামে মসজিদের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি কিংবা আত্মসাত করার কুট কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে।
মতামত / সুপারিশঃ পরিদর্শনটীম মনে করেন যে, ঢেউয়া হাজী পাড়া জামে মসজিদ দখল করার জন্য যারা শহীদুল্লাহ বদরু ও মোঃ মনছুরের নেতৃত্বে বিশৃংখলার চেষ্টা করছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। অন্যথায উক্ত মসজিদ দখলকে কেন্দ্র করে, সমাজে ব্যাপক বিশৃংখ্বলাসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এমনকি খুন-খারাবী হতে পারে বিধায় উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে সরজমিনে তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতঃ আইনের আওতায় আনার জন্য সুপারিশ করছি। ইতিপূর্বে যারা মসজিদের দানবাক্স হইতে টাকা চুরি করেছে এবং মসজিদের বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করতঃ আইনের আওতায় আনার জন্য, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত এলাকার কয়েকজন লোক পরিদর্শনটীমকে জানান যে, শহীদ উল্লাহ বদরু এবং মোহা: মনসুর তাদের কয়েকজন সহযোগীর মাধ্যমে উক্ত মসজিদ নিয়ে ষড়যন্ত্র করিতেছে মর্মে তারা জানিতে পারে। তারা সুনির্দিষ্ট ভাবে তাদেরকে দায়ী না করিলেও, অধিকাংশ মুসল্লিদের মতে এই ০২ জন ঘটনার নাটের গুরু, যাহা আপনার নির্দেশনায় আরো অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে উম্মোচন হতে পারে। উল্লেখ্য যে, এই দুইজন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার নাম ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকিয়া সাধারণ জনগণকে অতিষ্ঠ করে তোলে।স্থানীয় লোকজন এদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
আপনার সদয় অবগতি ও যথাযথ প্রদক্ষেপ গ্রহনের নিমিত্তে অত্র প্রতিবেদনের সাথে ওয়াকফ প্রশাসন, বাংলাদেশ স্বাক্ষরিত মোতাওয়াল্লী সংক্রান্তে বর্তমানে দায়িত্বরত যুগ্ন অফিসিয়াল মোতাওয়াল্লীদের বিষয়ে, বৈধ আদেশের কপি ২) মসজিদ কমিটির সদস্যদের নামীয় তালিকা ও রেজুলেশনের কপি ৩) ০২টি বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশিত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির কাটিং, ৪) বর্তমানে দায়িত্বরত মোতাওয়াল্লীদের, চট্টগ্রাম ওয়াকফ এস্টেট মোতাওয়াল্লী কল্যান সমিতির সদস্য কার্ড, স্থাপনা ভাংচুরের ০৪টি রঙ্গিন ছবিসহ মোট ১৬ পাতা সংযুক্ত করিয়া দিলাম।
অতএব, মহোদয়, অত্র পরিদর্শন প্রতিবেদনখানা আপনার সদয় অবগতি ও যথাযত আইনগত ব্যবস্থ্যা গ্রহণের জন্য, আপনার সমীপে পেশ করিলাম।
ধন্যবাদান্তেঃ- নুরুল আবছার আনছারী, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন,(বাসক), চট্টগ্রাম বিভাগ, বাংলাদেশ।