সড়ক বাতি স্থাপনের একটি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে অভিযান চালিয়েছে দুদকের একটি দল।
টাইগারপাসের অস্থায়ী নগর ভবনে বৃহস্পতিবার(১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দলটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খোঁজ খবর ও নথিপত্র যাচাই করে।
জাপানের জাইকার অর্থায়নে ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর ৩০টি সড়কের ৭৫ কিলোমিটার অংশে এলইডি বাতি ও খুঁটি স্থাপনের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় ২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে।
ওই প্রকল্পের বিষয়ে চলতি বছরের জুনে নগরীর এক বাসিন্দা দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। প্রকল্পের দরপত্রে অনিয়ম, পছন্দমত প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া ও বৈদ্যুতিক খুঁটির উচ্চতা কমিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয় সেখানে।
দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে অভিযান দলটি নগর ভবনের চতুর্থ তলায় প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশের কক্ষে নথিপত্র যাচাই করেন।
বিকালে অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “২০১৯ সালে জাইকার অর্থায়নে ৪৮ কোটি টাকার সড়ক বাতি ও খুঁটি স্থাপন প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করা হলে তাতে পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। কিন্তু তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
“প্রথম দফায় অংশ নেওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন অযোগ্য ঘোষণা করে বাতিল করা হয়েছে, তার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী।“
পরে ২০২০ সালে আবার দরপত্র আহ্বান করা হলে তাতে ৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় জানিয়ে এনামুল বলেন, “দ্বিতীয় দফার দরপত্র প্রক্রিয়ার মধ্যে শুধু কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কাগজপত্র আছে। বাতিল হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো কাগজপত্র নেই। তাদের কেন বাদ দেওয়া হল, সেটিও যাচাই-বাছাই করতে হবে।
“দরপত্র প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকার বিষয়ে সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী গ্রহণযোগ্য কোনো উত্তর দিতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে এসব অসামঞ্জস্যতা দেখা গেছে। আরও কাগজপত্র আমরা চেয়েছি। সেগুলো সরবরাহ করলে যাচাই-বাছাই করে এ বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ বলেন, “প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া ও ঠিকাদার নিয়োগ কার্যক্রম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সম্পন্ন করেছিল। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র এলজিইডির কাছে রয়েছে।
“কাগজপত্র গোপনের কোনো সুযোগ নেই। দুদক যেসব কাগজপত্র চেয়েছে, তা পরবর্তীতে সরবরাহ করা হবে।”
প্রকল্পটির কাজের মান নিয়ে এর আগে নগর সংস্থার সাধারণ সভায় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা একাধিকবার অভিযোগ করেছিল।