চট্টগ্রামে সর্বকালের সর্ববৃহৎ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এতে প্রায় ৬ হাজার হকারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার, আমতল, নিউ মার্কেট, নতুন রেলস্টেশন, পুরাতন রেলস্টেশন, ফলমন্ডি এলাকায় সড়ক দখল করে বসা হকারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান চলে। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট সাব্বির রহমান সানি।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক দখল করে হকাররা ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল। যা একেবারেই অবৈধ। শুধু রাস্তা নয় ফুটওভার ব্রীজ, ফুটপাত দখল করে স্থায়ী দোকানও নির্মাণ করেছিল। যা আমরা ভেঙে দিয়েছি। এতে সর্বসাধারণের চলার পথ সুগম হলো। এতো দিন এসব হকারদের কারণের বৈধ ব্যবসায়িরা ব্যবসা করতে পারেনি। এছাড়া এ সব সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও চলাচল করতে পারতেন না। গাড়ি চলাচলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হতো। এখন থেকে সব কিছু স্বাভাবিক হবে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, এ উচ্ছেদ অভিযানের পর উদ্ধার হওয়া জায়গায় কাটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হচ্ছে। পুনরায় যেন হকাররা এ স্থান দখল করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া মাইকিং করা হচ্ছে , যদি এরপর কেউ এসব স্থানে দখল করে ব্যবসা করে তাদের সরাসরি আইনের আওতায় আনা হবে। শাস্তি জেল জরিমানাও হতে পারে।
কয়েকজন পথচারী বলেন, আমরা এ ধরণের উচ্ছেদ আগে দেখিনি। এবার দেখলাম উচ্ছেদের সঙ্গে সঙ্গে কাটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। মাইকে মাইকিং করা হচ্ছে। আগে এ স্থানে বারবার উচ্ছেদ অভিযান চলেছিল। সকালে উচ্ছেদ হলে বিকালে আবার বসে যেতে দেখেছি হকারদের। কিন্তু এবারই মনে হচ্ছে প্রশাসন কঠোরভাবে অবস্থান নিচ্ছেন। আমারও দাবি সকালে উচ্ছেদের পর যেন বিকালে পুনরায় হকাররা বসতে না পারে।
চট্টগ্রাম ফুটপাত হকার্স সমিতির সভাপতি নুরুল আলম লেদু আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশে হকার্স মালিকরা নতুন কেউ বা নতুন কোন ব্যবসা নয়। যুগ যুগ ধরে এ ব্যবসা চলে আসছে। চট্টগ্রাম এ স্থান থেকে আজ প্রায় ৬ হাজার হকার্সকে বিতাড়িত করা হচ্ছে। এটা খুবই অমানিবক। আমি নগর পিতা চসিক মেয়রকে অনুরোধ করবো হকার্সদের রুটিরুজির কথা বিবেচনা করতে হবে। গত নির্বাচনের সময় চসিক মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম ঘোষণা দিয়েছিলেন হকার্সদের পুনর্বাসন করা ছাড়া উচ্ছেদ করা হবে না। কিন্তু তিনি আজ সে কথা রাখলেন না। পূর্ব কোন নোটিস ছাড়া হকার্সদের উচ্ছেদ খুবই অমানবিক। এ উচ্ছেদের প্রতিবাদের ভাষা আমার জানা নেই। আমি এ উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।