এক সময়ের সাধারণ কৃষক থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন ওরফে চিনি মোসলেম এখন আলোচনার কেন্দ্রে। তার বিপুল সম্পদের উৎস নিয়ে চলছে তোলপাড়। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তিনি শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে।
নাছিরাবাদ হাউজিংয়ে ইকুইটি অনিন্দিতা
ওআর নিজাম রোডের ভবন
সাতকানিয়ায় বিশাল অট্টালিকা
খাতুনগঞ্জে এমএস ট্রেড সেন্টার
সূত্রের খবর, এই উত্থানের পেছনে কাজ করেছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক সংযোগ। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ এবং সাবেক এমপি আবু রেজা নদভীসহ হাসিনা সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। নদভীকে নৌকা প্রতীকে জেতাতে ভোট ব্যাংক হিসেবেও কাজ করেছেন মোসলেম।
এলাকাবাসী জানায়, মোসলেমের বাবা এবং ভাই কৃষক। মোসলেম হঠাৎ অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছে। এসআলমের সাথে তার ব্যবসা রয়েছে। সাবেক এমপি নদভী তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়েছে গত ৫-৬ বছর ধরে। ভোটের সময় নদভীর জন্য ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছে মোসলেম।
মোসলেমের খুলশী এলাকার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর বলেন, এখানে বর্তমানে তার ২০ কাঠার ২টি প্লট আছে। তিনি অনেক জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন।
আয়কর সনদ অনুযায়ী তিনি তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হলেও অভিযোগ আছে, কথিত এমজি ট্রেডিং-এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ব্যাংক ঋণ আত্মসাৎ ও বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। বর্তমানেও এস আলমের বিভিন্ন স্থানে রেখে যাওয়া টাকা বিদেশে পাচার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের ওপর হামলার অর্থ জোগানদাতা হিসেবেও তার নাম উঠে এসেছে।
ছাত্র সমন্বয়ক ইমন বলেন, “চিনি মোসলেম কৃষক থেকে ব্রোকার থেকে এখন একদম আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছেন। আমি যতটুকু জানি তার চট্টগ্রাম শহরে ৪ থেকে ৭টার মত বাড়ি আছে। প্রত্যেকটা ১০ কাঠা করে যা এসআলম থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত। আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি নদভীর জন্য ভোটের মাঠে যথেষ্ট পরিমাণে লড়েছেন এবং এরমাধ্যমে উনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে পেরেছেন । তিনি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে বিগত সরকারের আমলে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে বড় বড় টেন্ডার এনে ল্যাপটপ আত্মসাত করেছেন। মূলত এটা চাই, যারা ফ্যাসিস্টের দোসর এবং ওই সময় সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছে তাদেরও বিচার হোক।”
তার সম্পদের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও পড়েছেন তোপের মুখে। সংবাদ প্রকাশ না করতে চিনি মোসলেম এই প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কল করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।
হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠার পেছনে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা নাকি অন্য কোনো অন্ধকার ইতিহাস, সেটাই এখন প্রশ্ন। দুদক-এর স্বাধীন তদন্তই এখন সকলের প্রত্যাশা।