চট্টগ্রামের বায়েজিদে জাল দলিল বানিয়ে মানুষের জায়গা দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইসমাইলসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম একাডেমির কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার পাঠানপুর জামে মসজিদের মোতায়াল্লী মো: ইব্রাহিম । এসময় তার দুই ভাই সরওয়ার আলম ও মো. সেলিমসহ স্থানীয় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
দোকান দখল করতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে সন্ত্রাসীরা
তিনি অভিযোগ করে বলেন, চট্টগ্রামের অক্সিজেন পাঠানপুর এলাকায় আমার পরিবারের নিজস্ব দখলীয় সম্পত্তির দুইটি দোকানঘর ভাড়া নেন মো. ইমাম হোসেন ও মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইসমাইলের নির্দেশে কয়েকজন স্থানীয় দখলবাজদের নেতৃত্বে চাঁদা দাবি করে অবৈধভাবে দুটি দোকানে তালা লাগিয়ে দেন শাহানাজ বেগম ইভা নামে এক নারী। পরে দোকানদার ও স্থানীয়রাসহ দোকানঘরের মালিক সেই তালা ভাঙতে গেলে শাহানাজ বাধা দেয়। এসময় তাকে দোকানের সামনে থেকে সরে যেতে বললে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসাতে মাটিয়ে শুয়ে পড়েন ওই নারী।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে জাল-জালিয়াতির তথ্য উঠে এসেছে
তিনি বলেন, দখলকারী ওই নারী আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইলের মাধ্যমে জাল দলিল বানিয়ে ওই দোকানগুলো দীর্ঘদিন দখল করার চেষ্টা করছে। তাদের দলিল জালিয়াতি নিয়ে মামলা করার পর গত বছর জানুয়ারির ১৮ তারিখ পিবিআইয়ের তদন্তে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই অভিযোগে গতবছর ২৪ এপ্রিল শাহানাজ বেগম ইভা, বোন রোকেয়া বেগম ও তাদের মা পারভিন আরা বেগমকে কারাগারে প্রেরণ করেন চট্টগ্রাম আদালত। ১ মাস ৭ দিন পর হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয় তারা। আওয়ামী সরকার পতনের পর বিশেষ ক্ষতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৩ নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ড এ ইউনিট আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো: ইসমাইল।
‘ক’ ইউনিট আ’লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইসমাইল
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইসমাইল
সম্প্রতি জেল থেকে বেরিয়ে আবারও আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল ওই নারীদের সাথে নিয়ে দুটি দোকান দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় তারা দোকানগুলোতে তালা লাগিয়ে চাঁদাদাবী করলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ভুক্তভোগীরা। পরে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন দখলবাজরা।
আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার
এ ঘটনায় সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে গত ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে এই মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ১৯৭৮ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে দলিল মূলে মালিক মৃত জমির খাঁর ছেলে মীর আহম্মদের কাছ থেকে কেনা সম্পত্তি তফজল আহম্মদ কন্ট্রাক্টরের। তার ওয়ারিশরাই বর্তমানে দখলে থেকে বসবাস করে আসছেন।
জাল জালিয়াতির সাথে জড়িত আওয়ামীলীগ নেতা ইসমাইল ও শাহানাজ বেগম ইভাসহ তাদের সহযোগীদের শাস্তি দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।