♦ আইডিয়াল হাই স্কুলে অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দাবী
সচেতন নাগরিক সমাজের অভিযোগ—দীর্ঘদিন ধরে কয়েক কোটি টাকার প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ, নিম্নমানের নির্মাণকাজ ও অডিটহীনতা।

সিটিজি নিউজ – চট্টগ্রাম জেলাধীন রাউজান উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নে ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত কদলপুর আইডিয়াল হাই স্কুলে গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি এবং নিম্নমানের নির্মাণ কাজের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নের সচেতন নাগরিক সমাজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর ২৪ নভেম্বর ২৫ খ্রীঃ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং জরুরি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক ও প্রাক্তন সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগঃ- অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন এবং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ আলী দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। অভিযোগকারীদের দাবি—এই দুইজনসহ তাদের ঘনিষ্ঠ ১০–১২ জন ব্যক্তি স্কুলের উন্নয়নের নামে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।


দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরিত অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পূর্বের ও বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতায় আনুমানিক ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও, এসব কাজ নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে করানো হয়, যার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের থেকে নিয়মিত কমিশন নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

চলমান ৮৫ লাখ টাকার প্রকল্পেও অনিয়মের অভিযোগঃ- বর্তমানে স্কুলে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার একটি উন্নয়ন কাজ চলছে। অভিযোগকারীরা দাবী করেন, এ কাজও জনগনের অগোচরে রাতের আঁধারে পরিচালিত হচ্ছে এবং এতে নিম্নমানের বালি, কালো পাথরসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন অংশে শেওলা পড়ে যাওয়া ও দেয়াল–ছাদের নাজুক অবস্থা এরই প্রমাণ বলে, অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদারকি ও অডিট হীনতার অভিযোগঃ- এলাকাবাসীর দাবি, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো ধরনের দৃশ্যমান অডিট বা তদারকি হয়নি, যা অনিয়ম করার অন্যতম কারণ। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ৩ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারীরা।
প্রভাবশালীদের ‘সহায়তা’ নিয়ে অভিযোগঃ- অভিযোগে আরও বলা হয়েছে—উক্ত দুইজন তাদের অনিয়মের বিষয়গুলো আড়াল করতে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কয়েকজন আঞ্চলিক পত্রিকার সাংবাদিককে বেআইনি ভাবে নিজেদের পক্ষে বশে নেন। ফলে কারও অভিযোগ উঠলে নানা উপায়ে অভিযোগসমূহ তাদের মাধ্যমে “ম্যানেজ” করা হয়। একজন সাবেক আমলাকেও তারা তাদের ঘনিষ্ঠ লোক পরিচয়ে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগকারীদের দাবি।

তদন্তের দাবিঃ- অভিযোগকারীরা বলেন “বিদ্যালয়ের উন্নয়ন দেখানোর নামে কোটি কোটি টাকার প্রকল্পে এই দু’জনের মাস্টার মাইন্ডে অনেক ধরনের অনিয়ম হয়েছে, যাহা সরজমিনে পরিদর্শন করলে সবই স্পষ্টভাবে ধরা পড়বে। আমরা চাই—দুদক দ্রুত তদন্ত কমিটি পাঠিয়ে সবকিছু যাচাই করুক।”

অভিযোগপত্রে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীর ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা অভিযোগকারীরা প্রমাণ হিসেবে জমা দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও প্রাক্তন সভাপতি, তাদের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
