চট্টগ্রামে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা বিপুল পরিমাণ বিদেশি সিগারেট ও তরল পানীয় ক্যানসহ দুজনকে আটক করেছে পতেঙ্গা মডেল থানা পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে একজন ইউনি ওশান শিপিংয়ের এক্সিকিউটিভ বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শুল্ক ফাঁকিতে একটি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানায়, গত ৮ জুলাই, মঙ্গলবার রাতে পতেঙ্গা মডেল থানা পুলিশ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দর এলাকায় একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালানো হয়।
এসময় ২৫০ প্যাকেট বিদেশি সিগারেট এবং ২৪টি লাল রঙের ক্যান উদ্ধার করা হয়, যার প্রতিটিতে ৩০০ মিলিলিটার করে তরল পানীয় ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই পণ্যগুলো সাগরপথে জাহাজে করে চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনা হয়েছে এবং সরকারের বিপুল পরিমাণ শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
এ সময় মাইক্রোবাসে থাকা দুই আরোহী, মোঃ মাসুক চৌধুরী (২৮) এবং মোঃ ফখরুল আমিন ভূঁইয়া (৫৮)-কে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, আটক মোঃ মাসুক চৌধুরী ইউনি ওশান শিপিং লাইনস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত। ঘটনার পর পরই প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম সোহাগ পতেঙ্গা মডেল থানায় এসে মাসুক চৌধুরীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য জোর তদবির চালান বলে জানা গেছে। এ ঘটনার একটি অডিও রেকর্ড হাতে এসেছে। যেখানে সিনিয়র ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম সোহাগ পুলিশকে টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেয়ার তদবির করেছিলেন বলে স্বীকারোক্তি রয়েছে।
তিনি বলেন, “ থানায় গিয়ে পুলিশকে সরাসরি অফার দিয়েছিলাম, হ্যান্ডসাম এমাউন্ট দিবো বলেছি, আমি বলেছি- যা লাগে আমি দিবো। কিন্তু পুলিশ বলেছে চালান দিয়ে দিবে। ”
সিনিয়র ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম সোহাগের এমন কথায় শুল্ক ফাঁকির এই কর্মকাণ্ডে ইউনি ওশান শিপিংয়ের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেই দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিদেশি পণ্য আনা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো: আজিজুর রহমান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অঞ্জন মজুমদার দায়িত্ব পালন করছেন।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানের একটি বড় সিন্ডিকেট উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।