বেবী চক্রবর্ত্তী,পশ্চিম মেদিনীপুর :-একটানা বৃষ্টি এবং একাধিক জলধারা থেকে জল ছাড়ার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি রাজ্যে। তেমনই করুন অবস্থা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের কাঁসাই নদীর তীরবর্তী ভবানীপুর, ভরতপুর, ট্যাবাগেড়িয়া, লোয়াদা, ত্রিলোচনপুর সহ একাধিক অঞ্চল।সবচেয়ে করুন অবস্থা ত্রিলোচনপুর এলাকায়।
এখনও ওই এলাকায় বাড়িগুলি কার্যত জলের তলায়, খাবার তো দুর অস্থ! একটু পানীয় জলের জন্য হা হুতাশ করছে জলবন্দি মানুষজন। তাঁরা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।বৃহষ্পতিবার বন্যা কবলিত মানুষদের ডেবরা ব্লক প্রশাসন তরফে পাশাপশি বেশ কয়েকটি সমাজসেবী সংস্থা জলবন্দি বাসিন্দাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। এলাকায় দুর্গত মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো খাবার তুলে দেওয়া হয়।
ডেবরা ব্লকের ত্রিলোচনপুর, টাঙ্গাশ্রী সহ একাধিক এলাকায় যে দিকেই চোখ যাবে সেই দিকেই শুধু জল আর জল! ত্রাণ বিতরণ এর সময় প্রায় এক গলা জলে দাঁড়িয়ে করুন চোখে ত্রাণ নিয়ে সাঁতরে পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছেন বাসিন্দারা।
এলাকার নলকূপ, রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি সবই জলে টইটম্বুর! কোথাও রাস্তায় এক কোমর জল, তো কোথাও বুক ছড়িয়ে জল এক মানুষ । পানীয় জল টুকুও পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। একাধিক ঘরবাড়ি এখনও জলের তলায় এক গলা জলে দাঁড়িয়ে এলাকার এক বাসিন্দা ত্রাণ নিয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে জানালেন , এমন দুর্বিসহ অবস্থা, আমাদের আগে হয়নি।কাছে খাবার নেয়, পানীয় জলের জন্য হাহাকার পড়েছে। তৃষ্ণা মেটাতে বাধ্য হয়ে বন্যার নোংরা জল পান করতে হচ্ছে । আবার কেউ কেউ বন্যার জলে ফিটকিরি মিশিয়ে পান করছেন।
পাশাপশি প্রশাসনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে তারা জানান, সরকারি ত্রাণ নিতে গেলে এক গলা জল পেরিয়ে প্রায় ৩কিলোমিটার যেতে হচ্ছে তাদের। তবেই কিছু শুকনো খাবার মিলছে। এই এলাকায় সকল বাড়ি জলের তলায়, যাদের দ্বিতল বাড়ি রয়েছে,তাঁরা কোনও ক্রমে বসবাস করছেন।অতিরিক্ত জল থাকায় নরক যন্ত্রনা ভোগ করতে হচ্ছে।
তবে নানা কিছু শুভানুধ্যায়ী মানুষ ও সংগঠন তাদের সাধ্যমত ত্রাণ বিলি করছেন, আপাতত সেগুলো নিয়েই কোনও রকমে দিন কাটছে জলবন্দি অসহায় পরিবারগুলির।সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো,কিন্তু,তাদের কাছে উমার আনন্দ ফিকে পড়েছে ,প্রাণ বাঁচাতে জলবন্দি ভাবেই এক একটা রাত কাটছে অসহায় পরিবারগুলির।
এদিকে ফের নিম্নচাপের মেঘে অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, কালো মেঘের অসুর বৃষ্টি অসহায় মানুষ গুলির জীবনে যেনো কালো অধ্যায় রচনা করছে। প্রকৃতির রোষে কার্যত দিশেহারা জলবন্দি বাসিন্দারা। এই দুঃস্বপ্ন কাটবে কবে? উমার কাছে করুন প্রার্থনা করছেন তাঁরা।