প্রায় ১১০০ কোটি টাকা দেনা নিয়ে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি। গত তিন বছরে ৫৫০ কোটি টাকার মতো বকেয়া ঋণ পরিশোধ ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরের এক হাজার ৩৬২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খালটি খনন কাজ চলছে। প্রকল্পের অবকাঠামোগত কাজের ৬০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। নগরের যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, নগর পরিকল্পনা, রাজস্ব আদায়, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন কাজ করেছি।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে চসিক মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের ৩ বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ এসব কথা বলেন।
প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের লালখান বাজার শাহ আমানত বিমানবন্দর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে টাইগারপাস অংশে আপত্তি মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
গত তিন বছরে চসিকের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়ে উদাহরণ টেনে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।
মেয়র রেজাউল বলেন, মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কোনো কাজ না হওয়ায় চট্টগ্রাম শহরে মানুষের দুর্দশা বেড়েছে। সিডিএ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (টাইগারপাস এলাকায়) বিষয়ে চসিকের আপত্তি থাকার পরও বাস্তবায়ন হয়।
দায়িত্ব পালনকালে গত তিন বছরে নিজের কাজ নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন চসিক মেয়র। এসময় সাংবাদিকদের সামনে তিনি গত তিন বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
গত তিন বছরেও ৩৮টি ফুটওভার ব্রিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, পরিকল্পনা ছাড়া ফুটওভার ব্রিজ করলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সময় নিয়ে আমরা কাজ করছি। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা করেছি। এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে। গত কয়েকদিন আগেও কয়েকটি ফুটওভার ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এম রেজাউল করিম বলেন, নগরের বেশিরভাগ খালগুলো খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। সিটি করপোরেশন মাত্র একটি খালের খনন কাজ করছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এ খাল খননের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে যতদিন পর্যন্ত নগরের মানুষ সচেতন না হবে ততদিন পর্যন্ত এ বিপদ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারবো না। ঘরের কাঁথা-বালিশ থেকে শুরু করে ভাঙা চৌকি পর্যন্ত খালে পড়ছে। সচেতনতা যদি মানুষের মধ্যে না আসে তাহলে মেয়রের ওপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। কেউ নালায় ময়লা ফেললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চলমান অভিযানের বিষয়ে মেয়র বলেন, ফুটপাতমুক্ত করে নগরীর সৌন্দর্য ফেরানো হবে। কোনো প্রভাব আমাকে দমাতে পারবে না। আমরা চাই ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত থাকুক। আমরা কারও ওপর জুলুম-নির্যাতন করছি না। আমাদের কাছে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের অভিযোগ আসে- তারা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারছেন না। আমি হকারদের জন্য হলি ডে মার্কেট করার ঘোষণা দিয়েছি। তারপরও তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা, চসিকের গাড়ি ভাঙচুর করছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ ও মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।