বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানা হত্যাকান্ডের উপর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও বিচার, ব্যাংক লুট, দুর্নীতি, লুটতরাজ ও টাকা পাচারের উপর শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং ১৫ বছর ধরে গুম, হত্যাসহ জুলাই আগস্টের ছাত্র জনতা গণহত্যার হুকুমদাতা সহ দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (১৭ আগষ্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আপামর গণতন্ত্রকামী জনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার লাশের উপর জাতি গঠনের যে স্বপ্নস্বাদ জাতি বুকে ধারণ করেছে পেশাজীবি সমাজ তা ব্যর্থ হতে দেবে না। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন আর জাতি বিনাশী যে কোন কূটকৌশলের বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের জনগণ ওয়াচডগের ভূমিকায় অবতীর্ণ। রাষ্ট্র সংস্কারের আক্ষরিক পর্যায়ে বিপ্লবের পরবর্তী চলমান নৈরাজ্য আর আতঙ্ক গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসন, জুলুম নির্যাতন, খুন, লুটপাটের তুলনায় পর্বতের হিমশৈলীর ছোট্ট চূড়া মাত্র। অন্তর্বতীকালীন সরকারের সুদূর পদক্ষেপ আর জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িকতা আর সংখ্যালঘু কার্ড ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ পুনরুত্থানের লক্ষ্যে যে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে তা বন্ধ হবে। জনমনে ফিরে আসবে কাংখিত স্বস্থি, শান্তি আর মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার ভয়হীন পরিবেশ।
নেতৃবৃন্দ জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে কয়েকটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে বলেন, বৃহত্তর জাতীয় সংস্কার ও রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও পেশাগত পরিক্ষীত ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা খুবই জরুরী। দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙে বাংলাদেশকে করদরাজ্যে পরিণত করার সুদূর প্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসেবে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকান্ডের উপর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও বিচার করা। ব্যাংক লুট, দুর্বিনীত দুর্নীতি, লুটতরাজ ও টাকা পাচারের উপর শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং ১৫ বছর ধরে গুম, হত্যা সহ জুলাই আগস্টের ছাত্র জনতা গণহত্যার হুকুমদাতা সহ দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যে সব গণমাধ্যম অতীতে পতিত স্বৈরচারের পদলেহন করে সুবিধা ভোগ করেছে, ছাত্র গণহত্যায় উস্কানী দিয়েছে, এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর হিসাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় নিয়োজিত তাদের হুঁশিয়ার করছি। অন্যথায় জাতি এসব গণমাধ্যম নামধারী স্বৈরচারের সেবাদাসদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৫ বছর ধরে অব্যাহত সংগ্রামে অবতীর্ণ পেশাজীবীরা আগামীতে রাষ্ট্র সংস্কারের এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির যে কোন উদ্যোগে স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
নেতৃবৃন্দ জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দিয়ে মুক্ত স্বাধীন নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়ার জন্য ছাত্র জনতাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। একই সাথে বিপ্লবের রক্ত স্নাত পথ ধরে বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে নোবেল জয়ী বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বতীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নসরুল কাদির চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ, এ্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান বিল্লাহ, ড্যাব মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জিয়া পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন কোর্ট বিল্ডিং শাখার সভাপতি অ্যাড. মো. আলাউদ্দিন।