বন্ধুর কাছ থেকে ক্যামেরা ধার নিয়ে বিভিন্ন ইভেন্টে ফটোগ্রাফি করতেন শাওন বড়ুয়া (২৩)। সেই ক্যামেরার জন্যই একটি সংঘবদ্ধ চক্র তাকে হত্যা করেছে। ৫ আসামিকে গ্রেফতারের পর বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, খুনিরা ওয়েডিং ফটোগ্রাফির কথা বলে প্রথমে শাওনকে ভাড়া করে। পরে নির্জন স্থানে নিয়ে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ক্যামেরা বাঁচাতে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে শাওনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার পঙ্কজ চক্রবর্তী বলেন, ক্যামেরাটি শাওনের এক বন্ধুর ছিল। তাই সে এটি দিতে চায়নি। এজন্য ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেছিল। এতে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার মাথা, শরীর, উরুসহ বিভিন্ন অংশে অন্তত ৭টি ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে তাকে ফেলে ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা পুলিশকে জানিয়েছে তারা মূলত বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে কাজ করা ফটোগ্রাফারদের টার্গেট করেই এ কাজ করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, একটি ফেসবুক পেজের সূত্র ধরে শাওনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে চক্রটি। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় চান্দগাঁও থানাধীন কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় একটি গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফির কথা বলে শাওনকে ভাড়া করে তারা। এজন্য তাকে অগ্রিম ৫০০ টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। পরে তাকে চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকা থেকে অনন্যা আবাসিক এলাকায় নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গ্রেফতাররা হলেন চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মোহরা এলাকার দিদারুল আলমের ছেলে ইমতিয়াজ আলম মুরাদ (২১), একই এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে আশহাদুল ইসলাম ইমন (২৪), নুরুল আমিনের ছেলে তৌহিদুল আলম (২৩), কাপ্তাই রাস্তার মাথার মো. সেলিমের ছেলে মো. বাহার (২২) ও কুমিল্লা জেলার আবুল কাশেমের ছেলে মো. আলমগীর (৩০)।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অনন্যা আবাসিক এলাকা থেকে শাওনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আগের দিন সোমবার রাতে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি।
নিহত শাওন সাতকানিয়া উপজেলার বাজারিয়া ইউনিয়নের শীলঘাটা গ্রামের দীপু বড়ুয়ার ছেলে। নগরের এমইএস কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি তোলার কাজ করতেন।