- আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি সামর্থ্য থাকলে কখনোই গ্রামে থাকা উচিত না।
গ্রামে ১০০ বিঘা জমির মালিক হওয়ার চেয়ে, শহরে এক টুকরো ভাড়া বাসায় থাকা অনেক ভালো,অনেক সম্মানের,অনেক আরামদায়ক।
গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করাটাকে কোন সূচকে এগিয়ে রাখা যায় আসলে?
গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এতই টক্সিক যে, তারা তাদের ব্যাক্তিগত জীবন থেকে আপনার জীবন নিয়ে বেশি চিন্তিত।আপনার চুল বড় কেন,আপনি বোরকা পড়েন না কেন,অনার্সে পড়লেও মেয়ের বিয়ে দেয়না কেন,বয়স ২৫ পেরিয়ে গেলেও এখনো জব হয়না কেন, আপনার ব্যাচমেট কেউ বিদেশে গিয়ে লাখ লাখ টাকা কামায় আপনি এখনো পড়াশুনা করেন কেন এসব আজগুবি বিষয় নিয়ে তাদের অনেক টেনশন। মাঝে মাঝে দেখবেন আপনার নিজের ফ্যামিলিও যেসব বিষয় নিয়ে চিন্তিত নয়, অন্যান্য মানুষ এর থেকে বেশি চিন্তিত।
গ্রামের টক্সিক বিষয়গুলোর আরেকটি বড় পার্ট হচ্ছে ঝগড়া,
আপনি এমন কোনো বাড়ি খুজে পাবেন না যেখানে জায়গা-জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ফ্যামিলি সেই ফ্যামিলির সাথে যেকোন ভাবে ঝগড়া লেগেই থাকে।
এক ইঞ্চি জায়গা নিয়ে মাথা ফাটাফাটি, অশ্লীল ভাষায় গালাগালি, মামলা মোকদ্দমা চলতেই থাকে।
এইজন ওইজনের নামে গোপনে প্যাচ লাগিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দেওয়া, কাউকে পছন্দ নাহলে তার নামে জায়গায় অজায়গায় বদনাম রটিয়ে দেওয়া,এমনকি বিয়ে আসলেও গোপনে প্যাচ লাগিয়ে দেওয়া, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের যেনো একটি নিত্যদিনের কাজ।
গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ই এতটা অজ্ঞ যে, তারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বুঝেনা, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বুঝেনা, এমবিবিএস ডাক্তার এর মানে বুঝেনা।
তাদের কাছে সরকারি চাকুরী মানে পুলিশ(হউক কনস্টেবল), সেনাবাহিনী(হউক সৈনিক), প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক এসব ই। আর একজন নার্সিং এ পড়া স্টুডেন্টকে যেমনভাবে ডাক্তার ভাবে তেমনি সরকারি মেডিকেলে এমবিবিএস পড়ুয়া কাউকেও সেরকম ই ভাবে। তাদের কাছে আপনি সরকারের কত গ্রেডের চাকুরী করেন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আপনি প্রাইভেট জব করেন নাকি সরকারী। আপনি যদি প্রাইমারি স্কুলের পিওনও হন তাও মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি, কিন্তু বেসরকারি যতো ভালো চাকুরী ই করেন,আমতা আমতা করবেই।
তাদের কাছে আপনার ভাল বেতনের বেসরকারী চাকরী থেকে, আপনার সে বন্ধুর দাম বেশি যে এসএসসির পর সৈনিক/কনস্টেবল/ বিদেশে কোনো কাজে চলে গেছে।
আর টক্সিসিটির সবচেয়ে বিরক্তিকর পার্ট হচ্ছে গ্রামের চায়ের দোকানগুলো। গ্রামের প্রতিটি চায়ের দোকানে চায়ে চুমুক উঠেই গীবত দিয়ে। যেখানে কার বৌয়ের বাচ্চা হচ্ছেনা,কার বৌ প্র্যাগন্যান্ট থেকে শুরু করে রাজনীতি,অর্থনীতি,খেলাধুলা কোনোটার ই গবেষণা বাকি থাকেনা। যার অধিকাংশই আবার গুজব।
(এতসবের মাঝেও গ্রামে কিছু আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী থাকেই,যারা আপনাকে বুঝতে চায়, বুঝার চেষ্টা করে। যারা অন্যের ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে এত আগ্রহী নয়, যারা মানে উচ্চশিক্ষা অর্জনের থেকে বিদেশে চলে যাওয়া কিংবা কোনো কাজে চলে যাওয়া কখনোই বেটার অপশন নয়,যারা চায়ের কাপে মিথ্যা আর গীবতের ধুয়ো উঠায় না।তাদের স্যালুট,তারা আজীবন সম্মানপ্রাপ্য)
(জন্ম থেকেই গ্রামের পলিমাটি গায়ে মেখেও,একজন খাটি গ্রাম্য মানুষ হয়েও এ কথাগুলো লিখার একমাত্র কারন তিক্ততা)