চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব বৈরাগ এলাকার খোশাল তালুকদার পাড়ার আলাউদ্দিন শাহ মাজারের জমি দখলের অপচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বাদে জুমা মাজারের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে পরিচালনা কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ও খাদেম গোলাম মোহাম্মদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মাজার পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব মো: আব্দুল আলীম তালুকদার।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, এই মাজার নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে কয়েকটি মামলা চলমান। এসবের কারণে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে ভক্ত-অনুরাগীদের নিকট মাজারের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। যত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে সবকিছুর মূলে মৃত গোলাম হোসেনের পুত্র ইমাম হোসেন দায়ী। আব্দুল আলীম প্র: আইয়ুব তার ছত্র ছায়ায় থেকে মাজারের দানবাক্স চুরি থেকে শুরু করে নানা অপকর্মে লিপ্ত। তাকে আমরা মাজারের ঝাড়ুদার হিসেবে খেদমতের জন্য নিয়োজিত করেছিলাম। কিন্তু আইয়ুব ইমাম হোসেনের কুপরামর্শে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হওয়ায় তাকে বের করে দেওয়া হয়। ইমাম হোসেনের উদ্দেশ্য হলো জাল দলিল সৃজনের মাধ্যমে জমি দখলের চেষ্টা করে কমিটিকে বেকায়দায় ফেলে কমিটিতে ঢুকা। এই ধরণের নোংরা মানসিকতার লোককে এলাকাবাসী কখনো মেনে নিবে না। তাই মাননীয় এমপি মহোদয় এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এলাকাবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, সদস্য মনছুর আলী, মাজারের ভূমিদাতার ছেলে মো: ইয়াকুব এবং মেয়ে বুলু বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রখ্যাত একজন পীরের এই মাজারে একসময় দূর দূরান্তর থেকে ভক্তরা আসতেন। কিন্তু ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কারণে মাজারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
আইয়ুব ও তার ভাই আব্দুল করিম মাজার থেকে ফায়দা লুটার জন্য বিভিন্ন অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদেরকে শেল্টার দিচ্ছেন প্রতারক ও জাল দলিল সৃজনকারী ইমাম হোসেন। এই ভূমিদস্যুকে সামাজিকভাবেও বয়কট করার অনুরোধ জানান বক্তারা। এই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খাদেম গোলাম মোহাম্মদ বলেন, এই মাজারের নামে প্রায় ১২ গন্ডা জমি রয়েছে। উক্ত ১২ গন্ডা জমির মধ্যে আমার মরহুম পিতা বাঁচা মিয়া ৪ গন্ডা প্রদান করেন। উক্ত ৪ গন্ডা জমি দখলের পাঁয়তারা করতেছে ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন এই ৪ গন্ডা জমি ১৯১৫ সালে সিএস মূলে মালিক জানে আলী গং থেকে খরিদ করেন লালজান বিবি। লাল জান বিবির নিকট থেকে ১৯৪০ সালে খরিদ করেন এয়াকুব আলী এবং গোলাম হোসেন। তারা ১৯৪২ সালে আসর জানের নিকট বিক্রি করেন। সর্বশেষ আসর জানের ওয়ারিশদের নিকট থেকে ১৯৮৫ সালে আমার পিতা গোলাম আলী প্র: বাঁচা মিয়া উক্ত জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ভুলবশত মাঠ জরিপে লাল জানের ছেলে ইয়াছিন খাঁর নামে আরএস খতিয়ান সৃজন হওয়ার সুযোগে প্রতারক ইমাম হোসেন ইয়াছিনের কয়েকজন ভুয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে তাদের নিকট থেকে আমমোক্তারনামা নিয়ে উক্ত জমি দখলের অপচেষ্টা করছেন। তার এই অপচেষ্টা কখনো সফল হবে না।